সর্বশেষ আপটেড

একজন আদর্শ ব্যবস্থাপকের দক্ষাতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার নীতিগুলাের সঠিক প্রয়ােগের উপর-কথাটির যথার্থতা মূল্যায়ন

এইচএসসি ২০২১ ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি সকলেই সুস্থ ও নিরাপদে আছো। দ্বাদশ শ্রেণির ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য ৬ষ্ঠ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ৩১ আগস্ট ২০২১ খ্রি. তারিখে মাউশি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। তাই আজ এসেছি তোমাদের এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর/সমাধান নিয়ে। অ্যাসাইমেন্টের নির্ধারিত শিরোনাম- একজন আদর্শ ব্যবস্থাপকের দক্ষাতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার নীতিগুলাের সঠিক প্রয়ােগের উপর-কথাটির যথার্থতা মূল্যায়ন।

তোমাদের বোঝার সুবিধার্থে এই আর্টিকেলের প্রথম অংশে ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অ্যাসাইনমেন্টের প্রশ্ন দেয়া হয়েছে এবং পরবর্তী অংশে ক্রমান্বয়ে ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধান/ উত্তর দেয়া হয়েছে।

এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর/সমাধান

অ্যাসাইনমেন্ট : একজন আদর্শ ব্যবস্থাপকের দক্ষাতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার নীতিগুলাের সঠিক প্রয়ােগের উপর-কথাটির যথার্থতা মূল্যায়ন।

নির্দেশনা (সংকেত/ ধাপ/পরিধি):

  • ব্যাবস্থাপনার নীতির ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে।
  • ব্যবস্থাপনার মূলনীতি বা আদর্শসমূহ ধারাবাহিকভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।
  • ব্যবস্থাপকের দক্ষতার সাথে নীতির প্রয়ােগ বিশ্লেষণ করতে পারবে।

ব্যবস্থাপনার নীতির ধারণা

ব্যবস্থাপনার নীতি হলো ব্যবস্থাপনার কার্যসম্পাদনের সাধারণ পথ নির্দেশন। দীর্ঘদিন ব্যবস্থাপনা কার্য পরিচালনা করতে যেয়ে ব্যবস্থাপকগণ যে সকল নিয়ম-নীতি পালন করে এসেছেন তার মধ্য হতে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য বলে প্রতিষ্ঠার নিয়ম নির্দেশিকাই ব্যবস্থাপনার নীতি হিসেবে গণ্য। একজন ব্যবস্থাপক যখন কিছু লোক নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালায় তখন অধিনস্তদের মাঝে কাজ করে দিতে হয়। তাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্দিষ্ট করার প্রয়োজন পড়ে। এতে প্রত্যেকে প্রত্যেকের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে। এভাবে কে কাকে নির্দেশ দেবে, কে কার নির্দেশ পালন করবে তা যদি ঠিক করে দেয়া না হয় তবে কাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়াই স্বাভাবিক। তাই এ সংক্রান্ত নিয়ম পদ্ধতির নির্দেশিকাকেই ব্যবস্থাপনার নীতি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

সাধারণত যে নিয়ম বা রীতি অনুসরণ করে কোনাে কার্যসম্পাদন করা হয় , তাকে নীতি বলে। আসলে নীতি হচ্ছে কার্যসম্পাদনের মৌলিক নির্দেশিকা। ব্যবস্থাপনার নীতি বলতে পরিকল্পনা সংগঠন কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজ কে বোঝায়। এর প্রতিটা কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের পূর্বনির্ধারিত কিছু সাধারন নির্দেশিকা আছে। যা পালন করা হলে প্রতিটা কাজে উত্তম ফলাফল লাভ করা সম্ভব। এরূপ নীতিসমূহ দীর্ঘ অনুশীলনের মধ্য দিয়ে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত থাকে যা সর্বজনীনভাবে প্রয়োগযোগ্য।

ব্যবস্থাপনার মূলনীতি বা আদর্শসমূহ

আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হেনরি ফেওল ১৪টি নীতির কথা বলেছেন। হেনরি ফেওল Administration Industrialle Generale প্রন্থে ব্যবস্থাপনার নীতির কথা বলেছেন। হেনরি ফেওলের ১৪টি নীতি বিজ্ঞানসম্মত বাস্তবানুগ ও সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় সর্বজনীনভাবে গ্রহণযােগ্যতা পেয়েছে। এ ১৪টি নীতি নিয়ে ব্যাখ্যা করা হলাে-

১। কার্য বিভাজন Division of works

এই নীতির মূল কথা হচ্ছে , সংগঠনের কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ করে। প্রতিটি কাজের দায়িত্ব কর্মদক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এক একজন বিশেষজ্ঞ কর্মীর ওপর অর্পণ করতে হবে। এটাকে শ্রম বিভাজনের নীতিও বলে। এ নীতি অনুযায়ী প্রত্যেক কর্মীকে একই কাজ নিয়মিত করতে হয়। ফলে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পীয় , কাজে ফাঁকি রােধ হয় , তত্ত্বাবধান ও জবাবদিহিতা সহজ হয় এবং বিশেষজ্ঞতা তৈরি হয়।

২। কর্তৃত্ব ও দায়িত্ব (Authority & responsibility)

এ নীতি অনুযায়ী দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব এমনভাবে বন্টন করতে হবে যাতে এ দুয়ের মধ্যে সুসামঞ্জস্য নিশ্চিত হয়। কেননা , দায়িত্ব অনুযায়ী কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা না থাকলে দায়িত্ব পালন আদৌ সম্ভব নয়। আবার দায়িত্বের তুলনায় কর্তৃত্ব বেশি বা কম হলে বিশৃঙ্খলা বা অনিয়ম দেখা দেবে। তাই দায়িত্ব ও কর্তৃত্বের ভারসাম্য রক্ষা অপরিহার্য।

৩। নিয়মানুবর্তিতা (Discipline)

শুধু ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নয় , সকল ক্ষেত্রেই এ নীতি প্রযােজ্য। অন্যথায় উত্তম সাজে। আশী করা যায় না। হেনরি ফেয়ল তাই ব্যবস্থাপনার সকল স্তরে নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখার জন্য উপয় কালের গুরুত্বারােপ করেছেন । তার মতে , প্রতিষ্ঠানে যােগ্যতাসম্পন্ন বস থাকবে এবং নির্দিষ্টনিময়নীতি থাকবে । অধস্তন বলতে প্রতি অনুগত থাকবে , নিয়মনীতি মেনে চলবে এবং অপরকে তা মেনে চলতে অনুপ্রাণিত করবে। তাহলেই নিয়মানুবর্তিতা বজায় থাকবে।

৪। আদেশের ঐক্য (Unity of command)

এ নীতির মূল কথা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানে নিয়ােজিত কর্মরি আদেশদাতা হবেন । একজন মাত্র ব্যক্তি । অর্থাৎ একজন কর্মীর একাধিক ঊেধ্বর্তন থাকতে পারবে না । এ প্রসঙ্গে Weihrich and some বলেন

“Unity of command means that employees should receive orders from one superior only”

যদি একই ব্যক্তি একসাথে একাধিক উর্ধ্বতনের নিকট হতে আদেশপ্রাপ্ত হন তাহলে তার পক্ষে কারাে আদেশই পালন , করা সম্ভব হবে না। কারণ একই সাথে একাধিক ঊর্ধ্বতনের আদেশ পরস্পর বিরােধী বা ভিন্নমুখী হতে পারে এক্ষেত্রে। একজন কর্মী কার আদেশ পালন করবে আর কারটা করবে না তা নিয়ে সমস্যায় পড়বে । তাই সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে। কার্যসম্পাদনের লক্ষ্যে আদেশদানের ক্ষেত্রে ঐক্যনীতি অনুসরণ করা অপরিহার্য।

৫। নির্দেশনার ঐক্য (Unity of direction)

এ নীতির মূল কথা হলাে প্রতিষ্ঠানের সকল নির্দেশনা হবে এক লক্ষ্য ও পরিকল্পনাকেন্দ্রিক । অর্থাৎ একটা সামগ্রিক উদ্দেশ্য বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি মাথায় রেখে তার আলােকে প্রতিষ্ঠানে প্রয়ােজনীয় নির্দেশনা দিতে হবে , যাতে নির্দেশনাগুলাের মধ্যে মিল বা ঐক্য থাকে। আর সমগ্র পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব একজন ব্যক্তির ওপরই ন্যস্ত থাকবে। কোনাে অবস্থাতেই পরস্পর বিরােধী আদেশ – নির্দেশ জারি করা যাবে না।

৬। সাধারণ স্বার্থে ব্যক্তিস্বার্থ ত্যাগ (Subordination of Individual to general Interest)

এ নীতির মূল কথা হচ্ছে । সংগঠনের সাধারণ স্বার্থকে ব্যক্তিস্বার্থের উর্ধ্বে স্থান দিতে হবে। কেননা সংগঠনের স্বার্থ রক্ষিত হলেই মালিক, শ্রমিক কর্মী , জনগণ তথা সর্বসাধারণের স্বার্থ রক্ষিত হবে । তাই কোনাে একজনের স্বার্থ কখনই প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বা লক্ষ্যের। ওপরে স্থান দেয়া উচিত নয়। এক্ষেত্রে সবাইকেই প্রথমে সংগঠনের স্বার্থ , তারপর ব্যক্তি স্বার্থসিদ্ধির চিন্তা করতে হবে।

৭। পারিশ্রমিক (Remuneration)

কোনাে শ্রমিকের প্রদত্ত শ্রমের আর্থিক মূল্যই হচ্ছে পারিশ্রমিক । শ্রমিকের প্রদত্ত শ্রমের । উপযুক্ত পারিশ্রমিক প্রদান করা ব্যবস্থাপনার অন্যতম নীতি। প্রতিষ্ঠানে নিয়ােজিত শ্রমিক – কর্মীর কাজের ধরন , পরিমাণ , মেধা , কর্মদক্ষতা , অভিজ্ঞতা , জীবনযাত্রার মান ইত্যাদি বিবেচনাপূর্বক উপযুক্ত বা ন্যায্য বেতন ও অন্যান্য সুযোগ – সুবিধা প্রদানের নীতিকেই পারিশ্রমিকের নীতি বলে।

৮। কেন্দ্রীকরণ (Centralization)

কেন্দ্রীকরণ বলতে কর্তৃত্বের বন্টন বা মাত্রা নির্ধারণকে বুঝায় । অর্থাৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব ব্যবস্থাপনা স্তরের কোন পর্যায়ে কী পরিমাণ থাকবে তা নির্ধারণ করাকেই কেন্দ্রীকরণ বলে । এ নীতি অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা উচ্চ ব্যবস্থাপনার হাতে কেন্দ্রীভূত রেখে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অধস্তন কর্মকর্তাদের মাঝে বণ্টন বা বিকেন্দ্রীভূত করতে হবে। উল্লেখ্য , কেন্দ্রীভূত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অধস্তন কর্মীদের কর্মস্পৃহা ও ভূমিকা হ্রাস করে এবং বিকেন্দ্রীভূত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কর্মীদের দায়িত্ববােধ জাগ্রত করে।

৯। আরােহণী শিকল বা জোড়া – মই – শিকল (Scaler chain)

এ নীতি অনুযায়ী ব্যবস্থাপনাকে এমনভাবে নকশা করতে বা সাজাতে হবে যাতে করে ব্যবস্থাপনা উচস্তর হতে নিম্নস্তরে ধাপে ধাপে অবস্থান করে এবং প্রতিটি ধাপের সাথে সুসম্পর্ক বজায় থাকে। এতে করে আদেশ – নির্দেশ বা সিদ্ধান্তসমূহ সাংগঠনিক কাঠামাে অনুসরণ করে উচ্চস্তরের নির্বাহী হতে পর্যায়ক্রমে নিম্নস্তরের নির্বাহীর নিকট পৌছাবে এবং তথ্য – উপাত্ত , পরামর্শ , অভাব – অভিযােগ একইভাবে নিম্নস্তরের নির্বাহী হতে উচ্চস্তরের নির্বাহীর নিকট পৌঁছাবে।

১০। শৃঙ্খলা (Order)

প্রতিষ্ঠানে যােগ্য ব্যক্তিকে যােগ্য হানে এবং প্রতিটি বস্তু বা উপকরণকে সঠিক স্থানে স্থাপন করার – নামই হচ্ছে সুখলা। এ নীতি অনুযায়ী প্রত্যেক কর্মচারীর জন্য কর্ম ও কর্মস্থল সুনির্দিষ্ট থাকতে হবে এবং সেই সাথে প্রতিটি বঙও যথাস্থানে স্থাপন করতে হবে। এতে করে প্রতিষ্ঠানে উত্তম কর্ম – পরিবেশ বজায় থাকবে এবং অপব্যয় ও অপচয় হ্রাস পাবে।

১১। সাম্যতা নিরপেক্ষতা (Equity)

সাম্যতা বলতে সকলের প্রতি সমান আচরণকে বুঝায়। এ নীতি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানে নিয়ােজিত সকল কর্মীকে সমান দৃষ্টিতে দেখতে হবে। অর্থাৎ রাগ বা অনুরাগের বশবর্তী না হয়ে পক্ষপাতহীনভাবে কর্মীদের যােগ্যতা ও কর্মদক্ষতা অনুসারে ক্ষমতা ও দায়িত্ব অর্পণ , কাজের যথার্থ মূল্যায়ন , যথাসময়ে ন্যায্য মজুরি প্রদান , প্রাপ্য সুযােগ – সুবিধা প্রদান করতে হবে এবং সকলের প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে। এতে কর্মীদের মনােবল , আনুগত্য ও কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পাবে।

১২। চাকরির স্থায়িত্ব (Stability of tenure)

এ নীতি অনুযায়ী কর্মীদের চাকরির নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব বিধান করা হলে তারা নিশ্চিন্তে ও নির্বিঘ্নে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজে মনােনিবেশ করবে এবং উদ্দেশ্যার্জনে সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে , প্রতিষ্ঠান ও নিজের স্বার্থকে এক ও অভিন্ন বলে মনে করতে সক্ষম হবে। পক্ষান্তরে যখন – তখন কর্মী ছাঁটাই , পদাবনতি , বদলি ইত্যাদির ভয় কর্মীদের কর্মস্পৃহাকে অবদমিত করে রাখে। তাই ব্যবস্থাপনার উচিত চাকরির স্থায়িত্ব বা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

১৩। উদ্যোগ (Initiative)

নতুন কিছু উদ্ভাবন বা আবিষ্কারের জন্য স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বাধীন প্রচেষ্টার সামর্থ্য বা শক্তিকে উদ্যোগ বলে। এ নীতি অনুযায়ী ব্যবস্থাপনার উচিত কর্মীদের উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের জন্য উপযুক্ত কর্মপরিবেশ তৈরি করা। স্বাধীন ও উপযুক্ত কর্মপরিবেশ কর্মীদের উদ্যোগী করে তােলে এবং উদ্দীপনা শক্তিকে বৃদ্ধি করে। ফলে তারা পরিকল্পনা। বাবায়নে স্বাধীন চিলা করার সুযােগ পায় এবং নতুন নতুন কর্ম – উপায় উদ্ভাবনে সচেষ্ট হয়।

১৪। একতই বল বা দলীয় চেতনা (Unity is strength or Esprit de crops)

এ নীতির মূল কথা হচ্ছে কমাদের মধ্যে। লায় চেতনী বা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রবণতা জাগ্রত করা । অর্থাৎ দলবদ্ধভাবে কাজ করলে অসাধ্য সাধন করা যায় – এ ধারণা সকলের মধ্যে দিতে হবে এবং সকল ব্যক্তি , বিভাগ ও উপবিভাগকে নিয়ে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে । তাহলে কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক সমঝােতা ও সহযােগিতা বৃদ্ধি পাবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থ সামষ্টিক স্বাথ হিসেবে গণ্য হবে।

একজন আদর্শ ব্যবস্থাপকের দক্ষাতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার নীতিগুলাের সঠিক প্রয়ােগের উপর-কথাটির যথার্থতা মূল্যায়ন।

উপরােক্ত ১৪টি নীতি ছাড়াও বাস্তবে ব্যবস্থাপনায় আরাে কিছু নীতি অনুসৃত হয়, যেমন-

নমনীয়তা (Flexibility) : কথায় বলে অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা (Contingency or situational management) অতএব , ব্যবস্থাপনাকে সবসময় নমনীয় পরিবর্তনশীল হতে হবে।

ভারসাম্যতা (Balancing) : এ নীতি অনুযায়ী সংগঠনের সকল বিভাগ , উপবিভাগ ও কাজের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সহযােগিতা ( Co – operation) : এ নীতিতে কার্যক্ষেত্রে ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে , বিভাগে বিভাগে , উচ্চ ব্যবস্থাপনায় নিম্ন। ব্যবস্থাপনায় পারস্পরিক সহযােগিতার কথা বলা হয়েছে।

সর্বজনীনতা (Universality) : এ নীতির মােদ্দাকথা হলাে সকল পর্যায়ের এবং সকল প্রকৃতির ব্যবস্থাপনাকে সমান। মর্যাদা ও স্বীকৃতি দিতে হবে।

মােটকথা , সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে কার্যসম্পাদনের মাধ্যমে উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনাকে প্রয়ােজনীয় সব । ধরনের নীতি অনুসরণ করতে হবে । কেননা ব্যবস্থাপনার কোনাে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। পরিবেশ – পরিস্থিতি থেকেই। ব্যবস্থাপনা নীতির উদ্ভব।

একজন আদর্শ ব্যবস্থাপকের দক্ষাতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার নীতিগুলাের সঠিক প্রয়ােগের উপর-কথাটির যথার্থতা মূল্যায়ন।

ব্যবস্থাপকের দক্ষতার সাথে নীতির প্রয়ােগ বিশ্লেষণ

আধুনিক ব্যবস্থাপনা (১৮৭০সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত )মূল শিল্প বিপ্লবের যুগ শেষে আধুনিক ব্যবস্থাপনার উৎপত্তি হয়ঃ। এসময়ের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সুশৃঙ্খলা ও ধারাবাহিক পদ্ধতি রীতিনীতি ও জ্ঞানের উন্মেষ ঘটে। আধুনিক যুগের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মনীষী তাদের মূল্যবান চিন্তাধারা ও তথ্য দিয়ে ব্যবস্থাপনা ও শাসনকে গুরুত্বপূর্ণ সমৃদ্ধ করে তুলেছে। নিম্নে প্রধান প্রধান মনীষী সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ-

ফ্রেডরিক উইন্সলো টেলার্স (১৮৫৫-১৯১২) :

সাধারণত শ্রমিক থেকে বড় কারখানার শীর্ষ পদ লাভ করেছিলেন। কর্মব্যস্ততায় তিনি লক্ষ্য করে করেনি যে শ্রমিক এবং ব্যবস্থাপক কেউ একটি নির্দিষ্ট কর্মদিবসের বঞ্চিত কাজ যে পরিমাণ সম্পর্কে অবহিত নয় । তাই তিনি ১৯১৯ সালে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ Principles of Scientific Management- এ নিম্মোক্ত চারটি নীতির কথা উল্লেখ করেনঃ-

  • ১. প্রত্যেক কার্যসম্পাদনের সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তন বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতির প্রবর্তন।
  • ২. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে শ্রমিক কর্মী নির্বাচন প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন।
  • ৩. ব্যবস্থাপনা ও শ্রমিক কর্মীদের মধ্যে সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি।
  • ৪. ব্যবস্থাপনা ও শ্রমিকদের মধ্যে দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন যাতে তারা নিজ নিজ কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারে।

এছাড়াও তিনি পরিকল্পনা প্রণয়ন কে নির্বাহি কার্য হতে আলাদাভাবে দেখেন।

হেনরী ফেয়লঃ- (১৮৪১-১৯২৫):-

হেনরী ফেয়লকে আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয়। ১৯১৬ সালে ফার্সি ভাষার লিখিত বিখ্যাত শীর্ষক গ্রন্থ General and industrial Administration এ ছয়টি নীতির কথা বলেন। নিচে এগুলো উল্লেখ করা হলোঃ-

  • ১. কারিগরি কার্যাবলী (উৎপাদন সংক্রান্ত)
  • ২. বাণিজ্যে কার্যাবলী (ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত)
  • ৩. আর্থিক কার্যাবলি (মূলধন সংগ্রহ ও এর ব্যবহার)
  • ৪. নিরাপত্তা মূলক কার্যক্রম (সম্পাদন ও ব্যক্তির নিরাপত্তা)
  • ৫. হিসাব রক্ষণ (জমা-খরচ পরিসংখ্যান) ও
  • ৬. ব্যবস্থাপনা কার্য (পূর্বানুমান ও পরিকল্পনা সংগঠন নির্দেশনা সমন্বয় সাধন ও নিয়ন্ত্রণ)

বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার নীতিঃ-

টেইলর তার গবেষণার কর্মের মধ্য দিয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার দুটি দিক মানবিক দিক ও বস্তুগত দিক নির্দেশ করেন। সেইসাথে তিনি এর ব্যবস্থাপনার কতিপয় আদর্শ তুলে ধরেন। যা নিম্নরূপঃ-

১. টিপসই এর পদ্ধতি পরিহারপুর মানুষের প্রতিটা কাজে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করা।
২. বৈজ্ঞানিক উপায়ে কর্মী নির্বাচন প্রশিক্ষণ ও তাদের উন্নয়ন সাধন করা।
৩. সহদপর্ণ শ্রম ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা ও
৪. ব্যবস্থাপনা ও শ্রমিকদের মধ্যে দায়িত্ব ও কর্তব্য সুষ্ঠু বন্টন।

উৎপাদনে উৎকর্ষতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য শ্রমিক ও ব্যবস্থাপকের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও মৈত্রীর সমর্পণ অত্যন্ত জরুরী। এর সম্পর্ক নির্ভর করে শ্রমিকদের অভাব-অভিযোগ প্রভৃতি দিকে দৃষ্টি দেওয়া। তাদের মঙ্গল সাধন করা বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার অঙ্গ।

এই ছিল তোমাদের এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর/সমাধান- একজন আদর্শ ব্যবস্থাপকের দক্ষাতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার নীতিগুলাের সঠিক প্রয়ােগের উপর-কথাটির যথার্থতা মূল্যায়ন।

আরো দেখুন-

প্রতি সপ্তাহে সকল স্তরের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং প্লেস্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন।

আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নোটিশ ডট কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক জনাব আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। বাবা আবদুল গফুর ভূঁইয়া এবং মা রহিমা বেগম। এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল আরিয়ান বয়স ৫ বছর। মেয়ে ফাবিহা জান্নাত বয়স ১ বছর। আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া এর শিক্ষাজীবন আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০১৮ সালে ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ঢাকা থেকে বিপিএড সম্পন্ন করেন। আজিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু। এরপর আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ লাকসাম উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছুদিন ক্লাস করার পর। পারিবারিক কারণে নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজ এ কিছুদিন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করার পর ভালো না লাগায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি নানা রকম সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কর্মজীবন কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় যোগদেন। বেশ কিছুদিন পর তিনি ২০১৯ সালে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় কুয়েত পারি জমান। কিন্তু সেখানকার কাজের পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় পুনরায় আবার বাংলাদেশে ফিরে এসে পূর্বের পদে কাজে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি স্বপ্ন গ্রাফিক্স এন্ড নেটওয়ার্ক নামে একটি মাল্টিমিডিয়া এবং প্রিন্টিং প্রেস প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী সেই সাথে স্বপ্ন ইশকুল নামক একটি কম্পিউটার ট্রেণিং ইনস্টিটিউট এর মালিকানায় আছেন যেখানে তিনি নিজেই ক্লাস পরিচালনা করেন। লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্ম ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্মের সাথে জড়িত আছেন। ২০১১ সালে রাইটার্স এসোসিয়েশন এর ম্যাগাজিনে তার প্রথম লেখা বন্ধু চিরন্তন প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

অ্যাডস্ ব্লকার পাওয়া গেছে!

দয়া করে আমাদের সাপোর্ট করার জন্য আপনার এডস্ ব্লকার ডিজেবল করে পেইজটি রিলোড করুন! ধন্যবাদ